করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহজনক রোগীদের জন্য বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনকে আইসোলেশন সেন্টার ঘোষণা করেছে নরসিংদী জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
এ আতঙ্কে রোগীশূন্য হয়ে পড়েছে বেলাব উপজেলার একমাত্র চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রটি।
এ হাসপাতালটিতে প্রতিদিন বেলাব উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী কুলিয়ারচরসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চিকিৎসা নিতে আসলেও এখন সেখানে রোগীশূন্য। রোগী শূন্যতায় অলস সময় কাটাচ্ছেন হাসপাতালটির কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগসহ হাসপাতালে নেই আগের মতো রোগীদের ভিড়। নেই ভর্তি রোগীও। পুরুষ ওয়ার্ডে দুজন রোগী ভর্তি থাকলেও, মহিলা ওয়ার্ড একেবারেই খালি। রোগী না থাকায় হাসপাতালে দেখা যায়নি চিকিৎসকদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০ দিন আগেও এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ১ থেকে দেড় হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা নিতেন। পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের সবগুলো সিটেই থাকতো ভর্তি রোগী। সম্প্রতি এই হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার ঘোষণা করায় আতঙ্ক কোনো রোগীই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না। এমনকি বহির্বিভাগেও চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন না রোগীরা।
হাসপাতালের তথ্যমতে, বুধবার (২৫ মার্চ) পেট ব্যথা নিয়ে একজন এবং ডায়রিয়া নিয়ে একজনসহ মোট দুজন রোগী ভর্তি হয়েছেন। জরুরি বিভাগ থেকে সারাদিনে মোট ৭ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। এর আগে মঙ্গলবার ৮ জন রোগী জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। অথচ গত ১০-১৫ দিন আগেও দৈনিক প্রায় দেড় হাজার রোগী বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিতেন এবং প্রতিটি ওয়ার্ডই রোগী ভর্তি থাকতো।
চিকিৎসা নিতে আসা বেলাব উপজেলার বীরকান্দা গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, আমি শরীর ব্যথার জন্য বেলাব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছিলাম। যখন জানলাম এখানে করোনা ভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয় তখন ভয়ে প্রাইভেট চেম্বারের ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন স্টাফ সময় সংবাদকে জানান, করোনা রোগীদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার ঘোষণা করা হলেও ৫০টি বেড ছাড়া এখানে নেই অন্য কোন সরঞ্জাম। ৫০ শয্যার নতুন ভবনটিতে আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোন করোনা সন্দেহজনক কোন রোগী এখানে রাখা হয়নি। এরপরও মানুষ আতংকে এখানে চিকিৎসা নিতে আসছেন না। সুরক্ষা না থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্মকর্তা, কর্মচারীরাও আতঙ্কে রয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা আতঙ্কেই রোগীরা ভর্তি হচ্ছে না। আইসোলেশন সেন্টার ঘোষণা হলেও করোনা রোগীদের চিকিৎসায় পর্যাপ্ত সরঞ্জাম এখানে নেই। শুধু ৫টি পিপিই (পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট) প্রদান করা হয়েছে। আইসোলেশন সেন্টারে কর্তৃপক্ষের ১০০টি বেডের লক্ষ্য থাকলেও বেড সঙ্কট থাকায় বর্তমানে ১৯টি বেড প্রস্তুত রাখা আছে।
করোনা আতঙ্ক কেটে গেলে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়বে বলে আশাবাদী।